জুমু’আর দিনের কাহিনীটা শোন। এক আশ্চর্য এবাদতের সময়টা জানো।

Mapping My Journey to Jannat Al-Firdous, In Shaa Allah

====================================

Balance Sheet – Right Hand Side

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

জুমু’আর দিনের কাহিনীটা শোন। এক আশ্চর্য এবাদতের সময়টা জানো।

————————————————————————–

 

বিসমিল্লাহ। আল হামদুলিল্লাহ। আস সালাতু আস সালামু আ’লা রসুল আল্লাহ।

একটা সহজ আমল কিন্তু হাজার বছরের নফল সিয়াম আর তাহাজ্জুদ সলাতের ছাওয়াব পেতে পারো ইন শাআ আল্লাহ।

 

এটা তোমার আমলনামা আসমান-জমিনের পরিবর্তন করে দিবে। ব্যাপারটা বুঝতে পারছো? আবার পড়ো। মনোযোগ দিয়ে পড়।

 

জুমু’আর সালাতের জন্য তোমাকে যদি ৫০০ গজ হেঁটে মাসজিদে যেতে হয় হয় আর এক গজে তুমি যদি ২ বার পা ফেলো তাহলে তুমি হাটবে ১০০০ কদম। তার মানে এক জুমু’আয় ১০০০ বছরের নফল সিয়াম মানে ১০০০ X ৩৬৫ দিন = ৩৬৫,০০০ টা সিয়ামের ছাওয়াব পাবে। আর ততটা রাতের তাহাজ্জুদ সালাতের ছাওয়াব পাবে। সুবহানাল্লাহ।

 

কিন্তু কিভাবে? শুধু হেঁটে গেলেই হবে? সেটা জানতেই ১০ মিনিট সময় করে মনোযোগ দিয়ে লেখাটা পড়ো। এই হাদিসটি তোমার আগে জানা থাকলেও, এমনকি এই আমলটা তুমি আগে করলেও এই লেখাটা পড়লে এর ব্যপকতা শুধু তুমি নও বরং তোমারো পুরো পরিবারকে ছেয়ে যাবে ইন শাআ আল্লাহ।

 

হিসাবটা কি বুঝছো? তুমি তো সহীহ হাদীস বিশ্বাস করো, তাই না? তাহলে কি আমল করতে হবে সেটা জানার আগে এই ছাওয়াবগুলি নিয়ে একটা রাত চিন্তা করো। তুমি কিসের বিনিময়ে এই ছোট্ট আমল কিন্তু এই অগুনন্তি ছাওয়াব থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে চাইবে সেটা ঠিক করো। আসলে এটা দিয়ে তুমি তোমার ঈমান কে, জান্নাত এবং জাহান্নাম আসলে তুমি কতটুকু বিশ্বাস করো এসব তুমি নিজেই পরিমাপ করতে পারো।

 

আল্লাহর একজন এবাদতকারী এই বিবরন জানার পর সে তার জীবনকে নির্দিষ্ট করে ফেলবে ওই ২/৩ ঘন্টার জন্য। সে ওই ২/৩ ঘন্টায় দুনিয়ার কোন বিষয়কে তার সামনে আসতে দেবে না। সে তার পরিবার কে মানসিকভাবে তৈরী করে ফেলবে, পরিবারিক পরিবেশ তৈরি করে ফেলবে ওই দুই/তিন ঘন্টার জন্য। পরিবারে সেদিন ঝগড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করবে না। পরিবারের কাছে অন্য কোন বিষয় প্রাধান্য পাবে না। এমনকি সে আগের রাত থেকেই নিজেকে মানসিক ভাবে এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি তৈরি করে হাতের কাছে রেখে দেবে যাতে তার গোসলে দেরী না হয়ে যায়, পোশাক খুঁজতে দেরী না হয়ে যায়, বৃষ্টিতে ছাতা খুঁজতে দেরী না হয়ে যায়। আগের রাতে তাড়াতাড়ী ঘুমাতে যাবে যাতে ভালো ঘুম না হওয়ার কারনে সে খুতবা শুনতে শুনতে তন্দ্রায় না ঝুঁকে পড়ে। চাকরীর কাজ, ব্যবসার কাজ গুলি এমন ভাবে সেরে নেবে যাতে ওই সময়ে কেউ তাকে ফোন না করে বা তার কাউকে ফোন না করতে হয়। ধীরে ধীরে ব্যাপারটা এমন হবে যে, তার কোন বন্ধু বা আত্মীয় ওই সময়ে তার কাছে বা তার বাড়ীতে আসবে না। ওই দিন সকালে তার কোথাও যাবার কোন পরিকল্পনা থাকবে না।

 

আচ্ছা মেয়েদের বিষয়টা কি?

মেয়েরা কি এই ছাওয়াব থেকে বঞ্চিত থাকবে? আল্লাহ কি ন্যায় বিচারক নন? (কুরআন আল কারিম ৯৫ঃ৮)। তাহলে মেয়েদের আমলটা কি? সেটা অনেক ব্যাপক।

 

একটা মেয়ে যখন এই বিষয়ে তার বাবাকে, ভাইকে, স্বামীকে, সন্তানকে সহযোগীতা করবে সে ও ওদের মতো একই ছাওয়াব পাবে। (অন্য সাধারান হাদিসের নিয়মে, যে কেউ সৎ কাজের সহযোগীতা করে, সেও ওই কাজের সমান ছাওয়াব লাভ করে) তাহলে ব্যাপারটা কি দাড়ালো? এই দিনটাকে উৎসবে পরিনত করে ফেলো।

 

আহা! একজন নারী যখন আগের দিন থেকে তার সন্তান এবং স্বামী কে এই কাজের জন্য উৎসাহ দেবে, তাদেরকে সময় মতো তৈরি হওয়ার জন্য অন্যান্য সব কিছু ব্যবস্থা করতে তার সাধ্যমতো চেস্টা করবে, একটা ঘরের পরিবেশই তো উৎসবের দিনের মতো হয়ে যাবে যখন বাবা তার সন্তানদেরকে নিয়ে মাসজিদের দিকে রওয়ানা করবে।

 

সুবহানাল্লাহ। বস্তুতঃ একটা সাহীহ হাদিস আছে যে, জুমু’আর দিন হলো মুসলিমের ঈদের দিন। আল্লাহু আকবর। মূলত আর একটা বিশেষ কারনে এই জুমাবার এর গুরুত্ব অনেক। সেটা অন্য সময় বলবো। এবার এই আমলটা শোনঃ

 

১। গোসল করবে। (এই গোসলটা ও আল্লাহর শেখানো নিয়মে করবে)

২। সবচেয়ে উত্তম কাপড় পরবে

৩। আতর দেবে

 

৪। এতো আগে জুমার জন্য রওনা হবে যাতে ইমামের সবচেয়ে নিকটে বসতে পারো, প্রথম কাতারে বসতে পারো।

 

৫। হেঁটে হেঁটে মাসজিদে যাবে (গাড়িতে না, একবারে অনন্যুপায় হলে ভিন্ন কথা, আল্লাহ তোমার অন্তর দেখবে আর তোমার চেস্টা দেখবে ইন শাআ আল্লাহ।)

 

৬। হাঁটতে হাঁটতে করনীয়ঃ

চোখ, জিহবাকে, কানকে হারাম থেকে রক্ষা করবে।

 

চোখের হেফাজতঃ

অসাবধানতাবশত হারামে চোখ পড়ে গেলে (যেমন, কোন নারী, পোস্টারে, বিলবোর্ডে নারীর ছবি ইত্যাদি)‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়বে (সাধারন নিয়ম অনুযায়ী)

 

কানের হেফাজতঃ

কোন গান, মুউজিক, কোন খারাপ শব্দ, গালি ইত্যাদি কানে আসলে ‘আউজুবিল্লাহ’ পড়বে (সাধারন নিয়ম অনুযায়ী)

 

জিহবার হেফাজতঃ

কোন অনাবশ্যক কথা বলা যাবে না।কিভাবে এই হাঁটার সময়টা ব্যবহার করবে? কোন মুসলিম দেখলেই তাকে সালাম দেবে। তাসবিহ পড়, মাসজিদে যাওয়ার দোয়া অথবা অন্নান্য দোয়া পড়, কোরাআন পড়, দোয়া অথবা কোরআন মুখস্ত কর অথবা কারো সঙ্গে কথা যদি বলতেই হয় তাহলে দ্রুত কথাগুলোকে, প্রসঙ্গকে আল্লাহর দিকে নিয়ে যাবে। আল্লাহ সম্পর্কিত কথা ব্যাতিত অন্য কথা পরিহার করবে। আর যদি কারো কথা বন্ধই না করতে পারো তবে, নিজের কানে তালা লাগিয়ে মনে মনে তাসবীহ পড়বে। অথবা চিন্তা করা। চিন্তার মধ্যে থাকবে।

 

কি চিন্তা করবে?

আল্লাহকে নিয়ে চিন্তা কর অথবা জান্নাত জাহান্নাম নিয়ে চিন্তা কর, জান্নাত নিয়ে চিন্তা কর। স্ত্রী সন্তানকে কিভাবে আরো আল্লাহর প্রতি অনুগত করানো যায়, তোমার কোন পাপ থেকে কিভাবে উদ্ধার পাওয়া যায়, কিভাবে দ্বীন এর জ্ঞ্যন অর্জন করা যায়, মোট কথা তোমার জান্নাতে যাওয়ার পথ নিয়ে চিন্তা করতে করতে মাসজিদে যাবে। মাসজিদে ঢোকা আর তার পরের কাজগুলিঃ

 

১। মাসজিদে ঢোকার দোয়া পড়বে

 

২। সালাম দেবে। কেউ তোমার দিকে তাকিয়ে না থাকলেও আস্তে করে সালাম দিতে পারো (দেখবে যে কেউ না কেউ তোমার সালামের জবাব দেবে, তোমার জন্য শান্তি কামনা করবে, এটা একটা দোয়া)

 

৩। সরাসরি যেখানে তুমি সহজে যেতে পারো এমন একটা জায়গা নির্দিষ্ট করবে। (কারো ঘাড়ের উপর দিয়ে ডিঙ্গিয়ে যাবে না, তবে কেউ যদি পা বিছিয়ে পথ বন্ধ করে বসে থাকে (সামনে জায়গা খালি থাকার পরে ও) সেই হতভাগার হাঁটু ভাঁজ করে সরিয়ে তোমার সামনে যেতে কোন সমস্যা নেই, বি ইযনিল্লাহ।

তবে এমনকি কোন শিশু বাচ্চাকে ও তার জায়গা থেকে সরিয়ে তার জায়গায় বসবে না। (এই কাজটার পরিনাম জাহান্নামের আগুন)

 

৪। জায়গায় পৌঁছে দুই রাকাত সালাত পড়বে। (সালাত না পড়ে বসা যাবে না। নিষেধ আছে)

 

৫। সালাত শেষে সুরা কাহফ পড়বে। অর্থসহ। মুসহাফ (কোরআন) না পেলে মোবাইলের অ্যাপ থেকে ও পড়তে পারো। তবে অবশ্যই অর্থসহ পড়বে।

 

৬। খুতবা শুরু হলে কারো সঙ্গে কোন কথা বলা যাবে না। এমনকি কাউকে এটা ও বলা যাবে না যে, “এই চুপ করো”

 

৭। অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনতে হবে। খুতবা এতো মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে যে, এমনকি এসময়ে তাসবীহ পড়াটা ও উলেমারা নিরুৎসাহিত করেছেন।

 

লেখাটা পড়ে মনে হতে পারে অনেক কিছু, অনেক আমল করতে হবে। আসলে তা নয়। তুমি লেখাটা আবার পড়। দেখবে, আমল খুব অল্প।

 

(১) আল্লাহর প্রতি মনোযোগ দাও।

(২) গোসল কর।

(৩) আতর দাও।

(৪) ভালো কাপড় পর।

(৫) আগে আগে মাসজিদে রওনা করো।

(৬) ইমামের কাছাকাছি এবং সামনের কাতারে বসো।

(৭) মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনো।

(৮) কোন কথা বল না।

 

এই কাজগুলি তুমি প্রতি সপ্তাহেই তো করো। তাহলে নতুন কি আছে এই হাদিসের মধ্যে? কেন এই হাদিসে, এই সাধারন আমলেরই এতো ছাওয়াব এর কথা বলা হয়েছে? আসলে সেটা বোঝানোর জন্যই আমাকে ওই একই কাজ গুলি এতো বিশদ করে বলতে হয়েছে। আর অনেকগুলো আমল যা এই হাদিসের আওতায় নয় কিন্তু প্রাসঙ্গিক বিধায় অন্য হাদিসের আলোকে বলা হয়েছে।

 

মূল ব্যপারটা হলো মনোযোগ, একাগ্রতা, নিমগ্নতা। ইংরেজীতে বলে MINDFULNESS।

 

এই হাদিসে বর্ণিত ছাওয়াব যদি তুমি পেতে চাও, তবে ওই গোসল করার সময় থেকেই তোমার মাথায় আল্লাহকে, আল্লাহর স্মরণকে নিয়ে আসতে হবে। তোমাকে ভাবতে হবে, আজ আল্লাহর সঙ্গে তোমার দেখা হবে।

 

আর ইমামের একবারে সামনে বসার প্রবল ইচ্ছা থাকতে হবে।(জান্নাতে কিছু জান্নাতি আল্লাহকে প্রতি শুক্রবারে দেখতে পাবে, এরা তারা যারা জুমুয়ার দিনে ইমামের কাছাকাছি বসেছে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনেছে) ওই সময় থেকে তুমি কারো সঙ্গে খারাপ আচরন করবে না, সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে, তোমার পরিবারের সদস্যদের অপরাধগুলি মাপ করে দেবে। আর বেশী বেশী আল্লাহ জিকির করবে। প্রতিটি কাজে বিসমিল্লাহ বলবে।

 

বিষয়টা হলো, তুমি প্রতিটি সেকেন্ডে আল্লাহ CONSCIOUS থাকবে।

 

তবে প্রাসঙ্গিক কিছু কথা জেনে রাখা ভালো।

এটা যতই গুরুত্বপূর্ণ আর যতই আকাশ্চুম্বি এর ছাওয়াব হোক না কেন মনে রাখবে, সব শেষে এটা একটা নফল এবাদাহ। আর দ্বীন এর জ্ঞ্যান অর্জনের গুরুত্ব যে কোন নফল এবাদাহ এর চাইতে বেশী।

 

দ্বীন এর জ্ঞ্যান না থাকলে তুমি নফল এবাদাহ করতে যেয়ে ফরজ এর আবশ্যকীয়তা ভুলে যেয়ে পাপী হয়ে যেতে পারো। যেমন, ওই জুমু’আর তাড়াহুড়ো করতে যেয়ে তুমি তোমার মায়ের/বাবার আকস্মিক একটা প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিলে না, একজনের সঙ্গে খিচড়ে মেজাজ দেখালে, ওই সময়ে কারো একটা সমস্যা তুমি সমাধান করতে পারতে বা কাউকে বিপদ থেকে থেকে মুক্তি দেবার ব্যাবস্থা করতে পারতে ইত্যাদি কাজগুলো যে কোন নফল এবাদাহ এর চাইতে আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয়।

 

তোমার জীবনের প্রতিটি কাজ তো একজন উলামা এসে সমাধান করে দেবে না। তাই দ্বীন এর জ্ঞ্যান অর্জন করাটা নফল এবাদাহ এর চাইতে গুরুত্বপূর্ণ। মনে রেখো। আল্লাহু আলাম। আল্লাহ আমাদের হেদায়াহ দিক। আমিন।

 

যাই হোক, এবার মূল হাদিসটা পড়ো।

 

————————

আউস ইব্ন আউস সাকাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি:

 

“জুমার দিন যে

 

গোসল করল, ভালো করে;

অতঃপর আগেভাগে মসজিদে গেল;

হেঁটে চলল, বাহনে চড়ল না;

ইমামের নিকটবর্তী হল;

অনর্থক কর্মে লিপ্ত না হয়ে মনোযোগসহ শ্রবণ করল;

 

তার প্রতি কদমে লেখা হবে এক বছরের আমল তথা এক বছরের সিয়াম ও কিয়ামের(সারা রাত তাহাজ্জুদ) সাওয়াব”।

 

(তিরমিজি-৪৯৬, আবুদাউদ-৩৪৫, সহিহ আল-জামে ৬৪০৫)

—————————————–

 

Hadith No: 345

Narrated/Authority of Aws ibn Abu Aws ath-Thaqafi

From: Sunan Abu Dawood. Chapter 1, Purification (Kitab Al-Taharah)

 

I heard Rasullah sallallahu alaihi wa sallam saying:

 

If anyone

 

makes (his wife) wash and he washes himself on Jumu’a,

goes out early (for Jumu’a prayer),

attends the sermon from the beginning,

walking, not riding,

takes his seat near the Imam,

listens attentively,

and does not indulge in idle talk,

 

he will get the reward of a year’s fasting and praying at night for every step he takes.

—————————

 

বিশেষ দ্রস্টব্যঃ সব বিষয় গুলির হাদিস রেফারেঞ্চ গুলি এই মুহূর্তে দিলাম না। আর এটা আমার নিজের পরিবারের লোকজনদের জন্য লিখা। আর তারা জানে আমি খুবই সাবধানী প্রচলিত বহু দুর্বল/জাল হাদিসের ব্যাপারে।

 

মনটা খচখচ করছে। আমি কখনো রেফেরেঞ্চ ছাড়া দ্বীন এর কোন কথা লিখি না। এই লেখাতে বেশকিছু বিষয়ের উল্লেখ করেছি যেখানে রেফেরেঞ্চ দেয়া জরুরী। কিন্তু আর একটা জুম্মাবার চলে যাচ্ছে দেখে তাড়াতাড়ী পোস্ট করে ফেললাম। তবে ইন শা আল্লাহ পরবর্তীতে আপডেট করবো।

 


Discover more from Mapping My Journey to Jannatul Firdous, En Shaa Allah!

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from Mapping My Journey to Jannatul Firdous, En Shaa Allah!

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading